Message from the department head
ঐতিহ্যবাহী সরকারি তিতুমীর কলেজ দেশের অন্যতম স্বনামধন্য একটি কলেজ। এই কলেজের প্রতিটি বিভাগের ওয়েবসাইট আধুনিকীকরনের সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। অত্র কলেজের সুযোগ্য অধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌস আরা বেগম এমন একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছেন বিধায় তাঁকে জানাই সাধুবাদ। এই সিন্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য তিনি যে ডিজিটাল ও অটোমেশিন কমিটি গঠন করেছেন আশা করি সেই কমিটির আয়ক ও সদস্যগণও নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে পদক্ষেপটির বাস্তবায়ন করে আমাদেরকে কৃতজ্ঞতা বশে আবদ্ধ করবেন।
এই কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে আমার কর্মকালের মেয়াদ ১ম পর্বে (২০০৬ইং থেকে ২০০৮ইং) তিন বছর ও ২য় পর্বে ২০১২ সনের মে মাস থেকে অদ্যবধি এগারো বছর সহ মোট ১৪ বছরের শিক্ষকতা চলছে। অত্র বিভাগের গোড়াপওন হয় সম্মান শ্রেণি (২০০৪-২০০৫) শিক্ষাবর্ষ থেকে। তখন এখানে সমাজবিজ্ঞান বিষয় হিসাবে খুললেও কোন বিভাগ ছিল না বিধায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের তত্ত্বাবধানে বিভাগ পরিচালিত হত । আমি তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপকের পদে প্রেষণে চাকরি করি । উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের আদেশ ক্রমে আমরা চারজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এই কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে পড়াতাম ও একাডেমিক দিক পরিচালনা করতাম। যা আমি বিভাগ পরিচিতিতে উল্লেখ করেছি। এই কলেজে সমাজবিজ্ঞান খোলার সূচনা লগ্নে শিক্ষার্থীদের হাল ধরতে পেরেছিলাম এবং পরবর্তীতে ২০১২ সালে আবার ফিরে এসে বিভাগে অধ্যাপনা করতে পারছি বিধায় আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ ও গর্বিত। সাধারন শিক্ষক ছাড়াও তিন দফায় বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছি। এই কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগটি আমার অতি শান্তি ও স্বস্থির প্রিয় প্রাঙ্গন। শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা মিলে আমারা একটি সমাজবিজ্ঞান পরিবার । চাকরি জীবনের প্রায় অর্ধেকটাই অতিবাহিত করলাম তিতুমীর কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। আমাদের শিক্ষার্থীরা মেধাবী ও সংস্কৃতিমনা, প্রায় সকলেই অনেক আন্তরিক বিদ্যানুরাগী। আমরা সমাজবিজ্ঞান পড়াই যার অপর নাম আচরণের বিজ্ঞান (Behaviorial Science)। অরিয়েন্টেশন ক্লাসে আমরা প্রথম দিনই এই বিয়টি শিক্ষার্থীদের অবহিত করি ,ওদের মনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেই তাদেরকে চলনে বলনে দেখলেই যেন মনে হয় প্রত্যেকে এক একজন সমাজবিজ্ঞানী। তাইতো তারা অনেক ভদ্র,সদালপী , পারস্পারিক বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে চলাফেরা করে । তাদের রয়েছে শিক্ষকদের প্রতি ও অগ্রজদের প্রতি শ্রদ্ধবোধ ও অফিস সহায়কদের প্রতি ভালবাসা। যা আমাদেরকে আপ্লুত করে।পড়াশুনার পাশাপাশি তারা অন্যান্য Co curricular activities এর সাথেও জড়িত থাকে। তারা নিয়িমিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়, সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করে পুরষ্কৃত হয়। কলেজের বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন যেমন : বিএনসিসি ,রোভার স্কাউট,শুদ্ধচার কবিতামঞ্চ, বাঁধন, সাংবাদিক সমিতি ও ডিবেটিং ক্লাব ইত্যারি সাথেও আগ্রহ ভরে কাজ করে চলছে । এখান থেকে পাশ করে তারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন চাকরি ও ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে । আমি আশা করি এগুলোর পাশাপাশি স্বদেশ প্রেম , মানবিকতা ,মূল্যবোধ, অসাম্প্রতিকতা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার ধারা অব্যহত রেখে এই বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষাকরা সর্বঙ্গীন উন্নয়ন করে চলবেন ।
(অধ্যাপক ড. সৈয়দা শাহনাজ বেগম)